Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ঘটনাপুঞ্জ

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সরকারি সেবা নিয়ে যেতে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর দেশের ৪,৫৪৭ ইউনিয়নে চালু হয় ‘ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র’, যা বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার নামে পরিচিত। নারীর ক্ষমতায়নে প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে একজন পুরুষের সঙ্গে একজন নারী উদ্যোক্তা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়। এসব সেবাকেন্দ্রে কম্পিউটার কম্পোজ থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য, ভর্তি ফরম পূরণ, জন্ম নিবন্ধন, বিমা, মোবাইল ব্যাংকিং, কৃষিকাজের জন্য মাটি পরীক্ষা ও সারের সুপারিশ, বিদ্যুত্ বিল পরিশোধ, ডাক্তারি পরামর্শসহ দৈনন্দিন ৬০ ধরনের সেবা পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি নির্বাচিত কিছু ডিজিটাল সেন্টার থেকে পাসপোর্ট ও ভিসার আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৩০০৮টি সেন্টারে চালু হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। বিদেশে গমনেচ্ছুক ২০ লাখ ২২ হাজার ৪৩৬ জন শ্রমিক অনলাইনে ডিজিটাল সেন্টারে নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে বড় একটি সংখ্যায় নারীও রয়েছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, ডিজিটাল সেন্টার তৃণমূল সেবার হাব হিসেবে গড়ে উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের পর দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনে ৪০৭টি ডিজিটাল সেন্টার ও ৩২১টি পৌরসভাতে ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। আইসিটি ডিভিশন এবং এটুআইয়ের মতে, প্রতি মাসে গড়ে ৪০ লাখ মানুষ এসব কেন্দ্র থেকে সেবা নিচ্ছে। এটুআইয়ের হিসেবে ডিজিটাল সেন্টার থেকে উদ্যোক্তারা এরমধ্যে আয় করেছেন ১৪০ কোটি টাকা।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সরকারি ওয়েবসাইট ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’-এ ৪৩ হাজার দপ্তর এখন সংযুক্ত। এতে যুক্ত হয়েছে মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়নের ২৫ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট। এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অফিসের নানা কার্যক্রম সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর দেশের সকল জেলায় জেলা ই-সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। জেলা ই-সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে এরমধ্যে ৮ লক্ষাধিক সেবাপ্রদান করা হয়েছে। দালালদের উত্পাত ছাড়াই ই-সেবাকেন্দ্র থেকে তিন দিনের মধ্যে জমির পর্চাসহ বিভিন্ন সেবা পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইনে দরপত্র জমা দিতে ঠিকাদারদের জন্য চালু করা হয়েছে ই-প্রকিউরমেন্ট। এখন অনেক মন্ত্রণালয় অনলাইনে দরপত্র আহ্বান করছে। এতে টেন্ডার বাণিজ্য রোধে এ ধরনের উদ্যোগ ভূমিকা রাখছে। আদালতের কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজ করতে চালু হয়েছে মোবাইল কোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। স্বল্প পরিসরে চালু হওয়া এ উদ্যোগের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালতের যাবতীয় ডক্যুমেন্ট অনলাইনে সংরক্ষণ এবং ব্যবহারের জন্য রাখা হচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে সকল রেকর্ড এসএ, সিএস, বিআরএস ও খতিয়ান কপি ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। এরমধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি খতিয়ান ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। খুব শীঘ্র চালু হতে যাচ্ছে ডিজিটাল রেকর্ড রুম। এরমধ্যে ২৩ লাখ ২০ রেকর্ড ডিজিটাল সিস্টেমে প্রদান করা হয়েছে।

সরকারি অফিসে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে এবং কর্মযজ্ঞ সম্পাদন প্রক্রিয়া গতিময় করতে জনবান্ধব ডি-নথি সিস্টেম চালু হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল মন্ত্রণালয়-বিভাগ-অধিদফতর এবং ৬৪ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে ডি-নথি সিস্টেম চালু করা হয়েছে। সরকারি নানা কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার ফলে তৈরি হওয়া ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষণে আইসিটি ডিভিশনে টায়ার-থ্রি ডাটা সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অন্যতম লক্ষ্যমাত্রা হলো পেপারলেস অফিস যা নিশ্চিত করতে পারে এই ডি-নথি সিস্টেম। উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করার জন্য এবং উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য এটুআইয়ের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড। বাংলাদেশের সকল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গ নাগরিক সেবা গ্রহণে মাত্রাতিরিক্ত ধাপ কমিয়ে বা প্রযুক্তির ব্যবহার করে সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সময়, অর্থ ও যাতায়াতের পরিমাণ হ্রাস করা যায় এমন উদ্ভাবনী উদ্যোগসমূহ বছরের যেকোনো দিন যেকোনো সময় একটি সহজ উপায়ে অনলাইনে জমা দিতে পারেন। একটি নিরপেক্ষ বাছাই পদ্ধতির মাধ্যমে বাছাইকৃত আইডিয়াসমূহে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান প্রদান করা হয়। সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের মাধ্যমে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সর্টিফিকেট, অনলাইন পরিবেশ ছাড়পত্র, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বয়স যাচাই, বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য টকিং ডিভাইসসহ ১৭০টি উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নের জন্য এটুআই কাজ করছে। ‘তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা নয়, বরং শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি’ এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, শিক্ষক কর্তৃক মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট তৈরি, শিক্ষক বাতায়ন, ই-বুক, মনিটরিং ড্যাশবোর্ড ও ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক নামক মডেলগুলো উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ মডেলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উপযোগী কন্টেন্ট তৈরি করে ক্লাসে ব্যবহার করছেন। যেখানে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। ২৩,৩৩১টি মাধ্যমিক ও ১৫,০০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ১,৮০,০০০-এর বেশি শিক্ষক এবং ১,৬৫০ মাস্টার-ট্রেইনার মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট তৈরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর গণভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রাথমিক স্তরের সকল ডিজিটাল বই এবং দৃষ্টি-প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের হাতে ব্রেইল বুক ও মালটিমিডিয়া টকিং বুক তুলে দেন। কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে কার্যকর ও সহজ উপায়ে কৃষকের কাছে সম্প্রসারণ সেবাকে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এটুআই তৈরি করেছে ‘কৃষি পোর্টাল’। কৃষি পোর্টালটি পাইলটিং হয়েছে এবং খুব শীঘ্র আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

বাংলাদেশকে জ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ  বিনির্মাণে (রূপকল্প-২০৪১) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে  আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়ন, ই-গভন্যান্স প্রতিষ্ঠায় সহায়তা, আইসিটি শিল্পের উন্নয়ন ও মানব সম্পদ উন্নয়নের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এর অংশ হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তররের কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয় ও মিরপুর উপজেলা কার্যালয় বর্তমানে  সরকারি জেলা এবং উপজেলা কার্যালয়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তাগণসহ সর্বস্তরের জনগণকে বিভিন্ন ধরণের তথ্য ও প্রযু্ক্তি নির্ভর সেবা, পরামর্শ ও টেকন্যিকেল সাপোর্ট প্রদানে করে যাচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১১০ এর অধিক সরকারি দপ্তরে ই-নথি কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ২০০ এর অধিক দপ্তর জাতীয় তথ্য বাতায়নে সংযুক্ত আছে। আইসিটি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস ২০১৭, ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০১৮,২০১৯,২০২০, জাতীয় ইন্টারনেট সপ্তাহ, জাতীয় উন্নয়ন মেলা- ২০১৮,২০১৯, ২০২০ প্রোগ্রামিং কনটেস্ট আয়োজন করা হয়েছে। “সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১টি ভাষা ও আইসিটিডি ডিজিটাল ল্যাব সহ ১ম পর্যায়ে ২২টি এবং ২য় পর্যায়ে ১৭টি ও ৩য় পর্যায়ে ১৬টি সর্বমোট ৫৫টি আইসিটিডি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়ন “প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন” প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০০ জন নারীকে Freelancer to Entrepreneur, IT Service Provider এবং Women Call Centre Agent এ তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্ণশীপ প্রদান কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ এর ১৭৫ জন শিক্ষককে Basic ICT in Education Literacy, Troubleshooting and Maintenance প্রশিক্ষণ, লার্নিং এন্ড আনিং প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫০ জন ফ্রিল্যান্সার তৈরি, জাতীয় শিশু কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন ও ২২০ জন শিশু কিশোরকে প্রোগ্রামিং এর প্রশিক্ষণ এবং জেলা পর্যায়ে  সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রায়  ৬০০ জনকে  ই-নথি প্রশিক্ষণ এবং প্রায় ৪০০ জনকে জাতীয় তথ্য বাতায়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি দপ্তরের ইন হাউস ট্রেনিং-এ ই-নথি বিষয়ক সেশনের মাধ্যমে প্রায় ১৫০ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। আইসিটি অধিদপ্তরে উদ্ভাবিত CAMS সফটওয়্যারের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলায় ৭০,০০০ উপকারভোগীদের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা প্রদান এবং সুরক্ষা সফটওয়্যারের মাধ্যমে  জেলায় ৮৫,০০০ জন নিবন্ধন পূর্বক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।